ধর্মে নেই বাড়াবাড়ি; আসুন ধর্মগ্রন্থ পড়ি

লিখেছেন লিখেছেন একপশলা বৃষ্টি ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৬:৩০:৪৩ সন্ধ্যা



সৃষ্টিকর্তার সর্বশ্রষ্ঠ সৃষ্টি মানবজাতি -এব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই। আরেকটি ব্যাপারেও দ্বিমত নেই, তাহল মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থায় জীবন পরিচালিত করতে হবে। মানুষকে হতে হবে আদর্শবান আর পরমত সহিষ্ণু। থাকতে হবে মানবিক কল্যাণবোধ ও সুস্থ রুচিশীলতা।

এই সব বিষয়ের সমন্বয়ে একজন ব্যক্তি হবে আদর্শবান আর একটি সমাজ হবে আদর্শ সমাজ।

এসব বিষয়াবলীর নির্দেশকল্পে একটি গাইডলাইন থাকাও বাঞ্চনীয়। আর সবার জন্য উপযোগী এই গাইডলাইনের নাম ধর্ম।

তাই বলা যায়, মানুষের জন্য কল্যাণকর জীবন পথের নামই ধর্ম।

বর্তমান বিশ্বের প্রায় প্রতিটি মানুষ আজ এ কথার উপর একমত যে, সমস্ত পৃথিবীবাসী একই পিতা-মাতার সন্তান। এখনকার বিজ্ঞানও নানাবিদ পরীক্ষার পর এই স্বীকৃতি দেয় যে, সারা মানবজাতি একই মাতা-পিতার সন্তান। আর এই মাতা-পিতা আরবের কোনো এক স্থানের বাসিন্দা ছিলেন।

যেহেতু আমরা সবাই তাদের সন্তান তাই তাদের ধর্মমতই আমাদের সর্বপ্রথম ধর্মমত। এরপর যত মতবাদ এসেছে সবই নানাভাবে সৃষ্ট। স্রষ্টা প্রদত্ব হিসেবে প্রমাণ করা যায় কি-না সেটা পরখ করে দেখার দাবী রাখে।

আমরা জানি, আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির হেদায়াতের জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবী পাঠিয়েছেন। তারা মানুষের হেদায়াতের জন্য কাজ করেছেন। ফলে তাদের কওম হেদায়াত পেয়েছে। তারা ইহুদি, খ্রিস্টানসহ নানা নামে পরিচিত হয়েছে।

আর এ কারণেই আমরা ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের অনুসারী হিসেবে নিজেদের দাবী করে থাকি। আর দাবীর যথার্থতা প্রমাণে যাবতীয় কলাকৌশল আর সর্বোচ্চ বাহুবলের প্রয়োগে লিপ্ত হই। অথচ আমরা ধর্মের মূলে গিয়ে খুঁজতে চেষ্টা করি না।

আমরা যারা কোনো না কোনো ধর্মের বিশ্বাসী; আমরা বিশ্বাস করি এমন সত্ত্বা আমাদের নিয়ন্ত্রন করেন যিনি সবকিছুর উপর কর্তৃত্বশালী, ক্ষমতাবান। কিন্তু সেই সত্ত্বা কে যিনি সবকিছু নিয়ন্ত্রন করেন? -এখানে এসে বিশ্বাসীরা নানা বিশ্বাসে বিভক্ত। কেউ এক খোদা কেউ তিন খোদা আবার কেউ অসংখ্য শক্তির উপাসনায় লিপ্ত। তবে সবচে' মজার ব্যাপার হল, আমরা সবাই পাপ মুক্তির জন্য উপাসনা করি। সবাই কল্যাণ চাই এজীবনে ও পরজীবনে। মুসলানের পরিভাষায় যা পরকাল আর সনাতন ধর্মীদের কাছে পরজন্ম।

মোটকথা, আমরা সঠিক পথে চলতে চাই। আর সঠিক পথ কেবল সৃষ্টিকর্তার দেখানো পথ। এ বিষয়গুলোতে সকল ধর্মের অনুসারীরা একমত। সৃষ্টিকর্তার দেখানো পথই ধর্ম -এটাও সবাই মেনে নিচ্ছি।

এবার সৃষ্টিকর্তার ব্যাপারে আমাদের কাছে প্রমান হল তাঁর বাণী বা ধর্মগ্রন্থগুলো।

সৃষ্টিকর্তা আসলে কে? তার ব্যাপারে ধর্মগ্রন্থ কি বলে?

হিন্দু, খ্রিস্টান ও ইসলামের সাম্য বিচারের জন্য এর ধর্মগ্রন্থগুলোকে পড়ার সুযোগ হয়েছে আমার। সে আলোকে এখানে নিজস্ব বিশ্লেষণ তুলে ধরছি-

সৃষ্টকর্তা সম্পর্কে ইসলামের মূল বাণী হল, 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' আল্লাহ ছাড়া কোনো প্রভু নেই। সৃষ্টিকর্তা একজনই।

হিন্দুধর্মের মূল ধর্মগ্রন্থ হল বেদ। বেদ আবার চারটি ১. হৃদবেদ। ২.শামবেদ। ৩. অথর্বেদ। যুযুর্বেদ।

হৃদবেদের ১০অধ্যায়ের ১১৫ সুক্তের ৫মন্ত্রে ইশ্বরের পরিচয় তুলে ধরে বলা হয়,

'একংব্রহ্ম দ্বিতীয়াং নস্যি। নেহ না নাস্তি কিঞ্চন।'

ব্রহ্ম বা ঈশ্বর একজন, দ্বিতীয় কেহ নেই। নেই নেই কিছুই নেই।

এখানেও ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্ম একজন বলা হয়েছে।

খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেলের নিউ টেস্টামেন্ট বা নতুন নিয়ম, যা তাদের কাছে মূল ধর্মগ্রন্থ, এর গসপেল অব মেথুজ এর ১২;৩২ এ ঈশ্বর সম্পর্কে বলা হয়,

That only the Lord is God and that theare is no other God But him. তিনিই একমাত্র প্রভু। তিনি ছাড়া অন্য কোনো প্রভু নেই।

সুতরাং ধর্মগ্রন্থের ভিত্তিতে বলতে পারি আমাদের প্রভু একজনই। আমাদের প্রভুর দেখানোমুক্তি ও পরকালীন শান্তির টথও এক। (আগামী পর্বে এ নিয়ে আলোচনা করব ইনশাল্লাহ)।

এর অন্যথা যারা করি এরা হয়ত নিজের ধর্মগ্রন্থের ব্যাপারে অবগত নই; নতুবা কোনো কারণে ধর্মগ্রন্থের বলে দেয়া সত্য আড়াল করে চলেছি।

ধর্মের আলোকে আমাদের প্রভু একজন আর আমরা সবাই একই ধর্মের অনুসারী।

বিষয়: বিবিধ

১২৯২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

268432
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:০০
অয়ন খান লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File